বেতাগীতে বাংলা নববর্ষ-১৪৩২ উদযাপন উপলক্ষে আনন্দ শোভাযাত্রা

বেতাগী( বরগুনার) প্রতিনিধিঃ আজ পহেলা বৈশাখ সোমবার বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার উদ্যোগে সকালে আনন্দ রেলি ও শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। এ সময় বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী সহ সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা কর্মচারী গণ উপস্থিত থেকে শোভাযাত্রার আয়োজনে অংশ নেন। শোভাযাত্রাটি নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে শুরু করে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় এসে শেষ হয়। পরে আলোচনায় সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অংশ নেন তারা ।
ঘুড়ি উৎসব, লাঠিখেলা, নাগরদোলাসহ,এমন নানা আয়োজনে বেতাগীতে সাজানো হয়েছে বাংলা বর্ষবরণ উৎসব। গ্রামীণ ঐতিহ্য আঞ্চলিক বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে আয়োজিত হচ্ছে এই উৎসব।
অতীতে বাংলা নববর্ষের মূল উৎসব ছিল হালখাতা। যা পুরোপুরি অর্থনৈতিক ব্যাপার। গ্রামে-গঞ্জে-নগরে ব্যবসায়ীরা নববর্ষের প্রারম্ভে তাদের পুরনো হিসাব-নিকাশ সম্পন্ন করে হিসাবের নতুন খাতা খুলতেন। এ উপলক্ষে তারা নতুন-পুরাতন ক্রেতাদের আমন্ত্রণ জানিয়ে মিষ্টি বিতরণ করতেন এবং নতুনভাবে তাদের সঙ্গে ব্যবসায়িক যোগসূত্র স্থাপন করতেন। চিরাচরিত এ অনুষ্ঠানটি আজও পালিত হয়।
বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনে বাঙালির প্রাণের এ উৎসব ঘিরে বিভিন্ন এলাকায় শুরু হয়েছে মেলা। সোমবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলেও আমাগী কাল থেকেই বিভিন্ন জায়গায় মেলা ঘিরে বৈশাখী আমেজে থাকবে।
মেলার আয়োজক ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এবার উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় মেলার আয়োজন করা হয়েছে। তিন দিন পর্যন্ত চলবে এসব মেলা।
বৈশাখ উপলক্ষে এসব মেলাজুড়ে বসছে নানা দোকানপাট। এর মধ্যে তাঁতের কাপড়, রঙিন পাখা, হস্তশিল্প, মাটির তৈজসপত্র, শিশুদের খেলনা, সাজ, কদমা আর বাহারি মিষ্টির দোকান অন্যতম। মেলা উপলক্ষে চলছে তাঁদের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। অনেকে ইতিমধ্যেই মেলায় নিয়ে এসেছেন তাঁদের পণ্যসামগ্রী।
মেলার প্রস্তুতি সম্পর্কে সুখেন পাল জানান, তাঁরা প্রত্যেকেই মেলার জন্য মাটি দিয়ে বিভিন্ন ধরনের খেলনা ও তৈজসপত্র তৈরি করেছেন। চাহিদার কথা চিন্তা করে পুতুল, ব্যাংক, আম, কাঁঠাল, হরিণ, ঘোড়া, হাতি, মাছ, ময়ূর, সিংহসহ শিশুদের হরেক রকম খেলনা তৈরি করেছেন। গৃহস্থালি পণ্যের মধ্যে হাঁড়ি, পাতিল, ঢাকনা, ঝাঁজর, কলসসহ নানা তৈজসপত্র তৈরি করেছেন। এ ছাড়া তৈরি করেছেন ঘর সাজানোর জন্য ফুলদানি, টবসহ নানা জিনিসপত্র।
বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বশির গাজী বলেন, বৈশাখ মানেই বাঙালির প্রাণের উৎসব। নতুন বর্ষকে বরণের পাশাপাশি উৎসবকে পরিপূর্ণতা দেয় বৈশাখী মেলা। এসব পেশায় জড়িতরা অনেকটাই মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এসব শিল্পী ও কারিগরদের উন্নয়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছেন। পাশাপাশি সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। নইলে কালের আবর্তে হারিয়ে যাবে বাঙালির আদি ঐতিহ্য।