নড়াইল-২ আসনে পাল্টে যেতে পারে ভোটের হিসেব

হুমায়ুন কবীর রিন্টু , নড়াইল প্রতিনিধি: নড়াইল -২ আসনে ভোটের মাঠের ফিরেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আলহাজ্জ্ব সৈয়দ ফয়জুল আমীর লিটু। দীর্ঘ আইনী লড়াই শেষে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাত্র ৯ দিন আগে তিনি নড়াইল-২ আসনে ( নড়াইল সদরের আংশিক ও লোহাগড়া) প্রার্থীতা ফিরে পেয়েছেন। তাঁর প্রার্থীতা ফিরে পাওয়ায় পাল্টে যেতে পারে ভোটের হিসেবে নিকেশ। সাধারণ ভোটারদের মধ্যে ভোট প্রদান তেমন আগ্রহ ছিল না। তিনি ভোটের মাঠে ফিরে আসায় ভোটারদের মাঝে অন্য রকম আমেজ কাজ করছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) নিজের প্রার্থীতা ফিরে পেয়ে ভোটের মাঠে নামেন সৈয়দ ফয়জুল আমীর লিটু। জানা গেছে, নড়াইল-২ আসনে নৌকা প্রতিক নিয়ে ভোটের মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন মাশরাফি বিন মোর্ত্তজা। তাঁর সাথে তাল মিলিয়ে দুর্দান্ত দাপটের সাথে ভোটের মাঠ কাপাচ্ছিলেন ওয়ার্কার্স পার্টীর নেতা নড়াইল-২ আসনের সাবেক সফল সাংসদ কমরেড শেখ হাফিজুর রহমান। তিনি এবার হাতুড়ি মার্কা নিয়ে মাঠে নেমেছেন। আরোও একাধিক প্রার্থী থাকলেও মুলত: তাদের দু’জনকে ঘিরেই চলছিল আলোচনা সমালোচনা। কমরেড শেখ হাফিজুর রহমান লোহাগড়া উপজেলা চেয়ারম্যান ও নড়াইল-২ আসনের সাংসদ থাকাকালে এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। তাছাড়া তাঁর উন্নয়ন ভাবনা ছিল এ যাবতকালের মধ্যে সবচেয়ে প্রশংসনীয়। তিনি ধর্ম, জাতি, বর্ণ, ধনী, গরীব নির্বিশেষে সমান অধিকার দিয়ে এবং সময় উপযোগি সিদ্ধান্ত নিয়ে নড়াইলকে আধুনিকায়ন করেছেন।
তবে বর্তমান সময়ের অন্যতম জনপ্রিয় জননন্দিত নেতা সৈয়দ ফয়জুল আমীর লিটু ভোটের মাঠে ফেরায় ভোট ভাবনা পাল্টে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন বিশ্লেষকরা। তিনি ট্রাক প্রতিক নিয়ে ভোট প্রার্থনায় নেমেছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী লিটুর প্রার্থীতা ফিরে পাওয়ার খবরে নড়াইল-২ আসনের ভোটারদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে। ল²ীপাশা খেয়াঘাট এলাকা সহ বিভিন্ন এলাকায় মিষ্টি বিতরণের খবর পাওয়া গেছে। সৈয়দ ফয়জুল আমীর লিটু লোহাগড়া উপজেলার নোয়াগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান। সদ্য অনুষ্ঠিত জেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি ছিলেন স্বতন্ত্র হেভিওয়েট প্রার্থী। ভোটের শেষ মুহুর্তে তিনি বাড়িতে অবরূদ্ধ হয়ে পড়েন। তারপরও অল্প ভোটের ব্যাবধানে তিনি অ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোসের কাছে পরাজিত হন। দল মত নির্বিশেষে তিনি নড়াইলের একজন জনপ্রিয় ব্যক্তি।
গত ৪ ডিসেম্বর মনোনয়ন পত্র যাচাই বাছায়ে তার মনোননয়নপত্র অবৈধ ঘোষনা করেন জেলা রিটার্নিং অফিসার। নির্বাচন কমিশনে আপিল করে প্রার্থীতা ফিরে না পেয়ে বিজ্ঞ উচ্চ আদালতে আপিল করেন। সেখানে আইনী লড়াইয়ে প্রার্থীতা ফিরে পান। তাঁর ভোটের মাঠে ফিরে আসার লড়াইয়ে বিজয়টাকে নড়াইলের মানুষ ভিন্ন দৃষ্টিতে দেখছেন। তদুপরি নির্বাচন বিশ্লেষক ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের ধারনা শেষ পর্যন্ত মুল লড়াই হবে নৌকার প্রার্থী মাশরাফি বিন মোর্ত্তজা বনাম ট্রাক প্রতিকের স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ ফয়জুল আমীর লিটু’র মধ্যে। একেবারেই নির্বাচনের শেষ মুহুর্তে এসে ভোটের মাঠে নেমে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন লিটু। তাই তাকে পিছনে ফেলে বিজয় নিশ্চিত করতে মাশরাফিকে বেশ বেগ পেতে হবে বলে মনে করছেন স্থানীয় রাজনীতিক মহল। এদিকে দ্বিধা বিভক্ত আওয়ামী লীগের সকল স্তরের নেতা-কর্মীদের নৌকার পক্ষে স্বক্রিয় কাজ করতে দেখা যাচ্ছে না। আ’লীগের অনেক নেতা-কর্মী প্রকাশ্যে ও গোপনে লিটু’র পক্ষে ট্রাক প্রতিকে ভোট প্রার্থনা করছেন।
প্রসঙ্গত: এ আসনের প্রার্থীরা হলেন মাশরাফি বিন মোর্ত্তজা(নৌকা), ওয়ার্কার্স পার্টি অ্যাডভোকেট শেখ হাফিজুর রহমান(হাতুড়ি), জাতীয় পার্টি-এরশাদ অ্যাডভোকেট ফায়েকুজ্জামান ফিরোজ (লাঙ্গল), এনপিপির মনিরুল ইসলাম(আম), গণফ্রন্টের এ্যাডভোকেট লতিফুর রহমান(মাছ) ও ইসলামি ঐক্যজোট মোঃ মাহবুবুর রহমান (মিনার), স্বতন্ত্র প্রার্থী নুর ইসলাম (ঈগল), স্বতন্ত্র প্রার্থী আলহাজ্জ্ব সৈয়দ ফয়জুল আমীর লিটুসহ মোট ৮ জন প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন।
স্বতন্ত্র প্রার্থী ট্রাক প্রতিকের সৈয়দ ফয়জুল আমীর লিটু বলেন, একটি দুষ্টু চক্র ষড়যন্ত্র করে নির্বাচন থেকে দুরে সরিয়ে রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়েছে। কিন্তু সর্বশক্তিমান আল্লাহ সঠিক বিচার দিয়েছেন। এ বিজয় নড়াইলবাসির। তিনি আরোও বলেন ইউনিয়ন ও উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন জনগণের ভোটে। তাই জনগনের প্রতি আস্থা বিশ্বাস আছে। আল্লাহ রহমত করলে অল্প সময় কাজ করেই তিনি বিজয়ী হওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।