মোঃ আক্কাছ আলী,ভালুকা (ময়মনসিংহ):প্রতিনিধি- ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার ধীতপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত  শামলাশাহ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় শিক্ষক সংকটে প্রায় অচল। ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত এ বিদ্যালয়টি এক সময় শিশু শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত শতাধিক শিক্ষার্থী নিয়ে সুনামের সাথে পরিচালিত হলেও বর্তমানে তা হারাতে বসেছে খ্যাতি ও শিক্ষার্থী—দুই-ই।

বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে কোনো পরিচালনা কমিটি না থাকায় শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ রয়েছে। ফলে শিশু শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে বিলুপ্তির পথে প্রাথমিক শাখা।অবশিষ্ট শ্রেণিগুলোতেও ক্লাস হচ্ছে সীমিত পরিসরে।

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ হোজ্জাতুল ইসলাম বলেন,”শিক্ষকের অভাবে নিয়মিত পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। শিশু শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত কার্যক্রম বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছি। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে এক ধরনের হতাশা তৈরি হয়েছে। দ্রুত শিক্ষক নিয়োগ না হলে পুরো প্রতিষ্ঠানটিই হুমকির মুখে পড়বে।”

বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি মোঃ এমরান মিয়া বলেন, “আমার দায়িত্বকালে শিক্ষক নিয়োগের প্রয়োজনীয়তা থাকলেও স্থানীয় কিছু জটিলতার কারণে আমরা কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারিনি। তাই শিক্ষক নিয়োগ দেয়া সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোস্তফা কামাল জানান, “আমরা বিষয়টি সম্পর্কে অবগত। একটি কার্যকর পরিচালনা কমিটি গঠনের উদ্যোগ নিতে হবে, যাতে দ্রুত শিক্ষক নিয়োগ সম্পন্ন করা যায়। এই সংকটে দ্রুত সমাধান না হলে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হার বেড়ে যাবে। সংশ্লিষ্টদের সমন্বিত উদ্যোগ এখন সবচেয়ে জরুরি।” সরকারীভাবে নির্দেশনা না থাকায় সংযুক্ত বিদ্যালয় গুলোতে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া সম্ভব হচ্ছেনা ফলে শিক্ষক সংকটে প্রাথমিক  শাখাগুলো বন্ধের পথে।

অভিভাবক ও স্থানীয়রা জানান, এক সময়ের সুনামধন্য এ বিদ্যালয়ে এখন আর নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি হতে চায় না। অনেকেই বাধ্য হয়ে মেয়েদের অন্যত্র ভর্তি করছেন।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে এই ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানটি পুরোপুরি কার্যত বন্ধ হয়ে যেতে পারে। একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শুধুমাত্র অবকাঠামো দিয়ে নয়—শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনায়ই তার প্রাণ থাকে। তাই দেরি না করে এই সংকট নিরসনে জরুরি ভিত্তিতে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছেন।