# Tags

ফুলবাড়ীর শারীরিক প্রতিবন্ধী মানিক পা দিয়ে লিখে বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেলেন  

উত্তম কুমার মোহন্ত, ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) থেকে:
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সদর ইউনিয়নের চন্দ্র খানা গ্রামের মিজানুর রহমান ও মরিয়ম দম্পতির ছেলে,দুইহাত বিহীন ঠোঁট কাঁটা জন্ম প্রতিবন্ধী অদম্য মেধাবী ছাত্র মানিক রহমান পা দিয়ে লিখে এসএসসি ও এইচএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পাওয়ার পর দিনাজপুর হাজি মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি)ভর্তি পরীক্ষায় বি-ইউনিটে মেধা তালিকায় ১৯২তম স্থান অধিকার করেছেন।
রবিবার১১ (এপ্রিল) ফলাফল প্রকাশ হলে মানিকের এ সাফল্যের জন্য বাবা-মা আত্নীয় স্বজন পাড়া প্রতিবেশী সকলেই আনন্দ উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।
দুইহাত না থাকলেও পড়াশুনায় পিছিয়ে নেই তার ইচ্ছা শক্তি সাধারণ ছাত্র ছাত্রীদের চেয়েও অনন্য। বিধাতার একি নির্মম পরিহাস জন্ম প্রতিবন্ধী হাত বিহীন ঠোঁট কাঁটা মানিককে দুনিয়াতে অদম্য মেধাবী করে পাঠিয়েছেন দৃষ্টান্ত স্থাপনের জন্য। তাইতো পা দিয়ে লিখে ফুলবাড়ী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ২০১৬ সালে পিএসসিতে গোল্ডেন প্লাস এরপর ফুলবাড়ী জছিমিয়া মডেল সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০২০ সালে জেএসসিতে জিপিএ-৫ মেধাতালিকায় একই প্রতিষ্ঠান থেকে ২০২২ সালে এসএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে গোটা উপজেলাকে তাকে লাগিয়ে দিয়েছিল মানিক রহমান। এছাড়া পা দিয়ে মোবাইল চালানো কম্পিউটার টাইপিংয়ে যথেষ্ট পারদর্শী সে, ছোট বেলা থেকেই তার স্বপ্ন পড়াশোনা করে ভবিষ্যতে একজন দক্ষ কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার। কঠোর পরিশ্রম আর অধ্যাবসায়ের  কারণে অবশেষে তার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন পূরণের দার উন্মোচন হল।
মানিক রহমান বলেন, আমার দুটি হাত না থাকলেও আল্লাহর অশেষ রহমত বাবা-মা ও শিক্ষকদের দোয়া এবং অনুপ্রেরণায় আমি পিএসসি থেকে এস এসসি পর্যন্ত সকল পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছি। এবছর দিনাজপুর হাজি মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বি-ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে মেধা তালিকায় ১৯২তম স্থান অধিকার করেছি। সকলেই আমার জন্য দোয়া করবেন আমি যেন একজন দক্ষ কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হতে পারি।
মানিকের বাবা মিজানুর রহমান ও মা মরিয়ম বেগম জানান, আমাদের দুই ছেলের মধ্যে মানিক বড় ছোট ছেলে মাহিম নবম শ্রেণীতে পড়ে। মানিক জন্ম থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী তার দুটি হাত নেই দুটি পা একটি অন্যেটির চেয়ে অনেকাংশে খাটো ঠোঁট কাঁটা। আমরা তাকে কখনো প্রতিবন্ধী মনে করি না,হাত না থাকায় ছোট থেকেই আমরা তাকে পা দিয়ে লেখার অভ্যাস করিয়েছি। পা দিয়ে লিখলেও তার লেখা অনেক সুন্দর পড়াশুনায় সে খুব মনোযোগী ছোট বেলা থেকে তার ইচ্ছে আমি কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হবো সকলের দোয়ায় আজ তার কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্নের দ্বার উন্মোচন হলো। সকলেই দোয়া করবেন সে যেন তার কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে পারে।