# Tags

কিশোরগঞ্জে মহিলা লীগ নেত্রীকে বিশেষ অতিথি করে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের মতবিনিময়,তোপের মুখে হাসনাত

আব্দুর রউফ ভুঁইয়া, কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি-কিশোরগঞ্জে আওয়ামী মহিলা লীগ নেত্রীকে মঞ্চে রেখে ছাত্র, সাংবাদিক ও সুধীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় করলেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম।

শনিবার দুপুরে জেলা পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে এই মতবিনিময় সভা করেন তিনি। এতে উপস্থিত লোকজনের তোপের মুখে পড়েন হাসনাত কাইয়ুম।
মতবিনিময়ে বিশেষ অতিথি হিসেবেও বক্তব্য রাখেন জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ফাতেমা জোহরা আক্তার। মতবিনিময় সভার ব্যানারে লেখা ছিল ‘রাষ্ট্র বাঁচাতে প্রয়োজন সংস্কার, সমঝোতা ও নির্বাচন।’

এতে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় হাসনাত কাইয়ুম বলেন, ‘রাষ্ট্র সংস্কারের প্রশ্নে প্রয়োজনে যার তার সাথে সমঝোতা করবো।

এ সময় এক সাংবাদিকরা মঞ্চে বসা ফাতেমা জোহরাকে দেখিয়ে হাসনাতকে প্রশ্ন করেন, তার মানে আওয়ামী লীগের সঙ্গেও সমঝোতা করতে আপনি রাজি? এর জন্যই আওয়ামী লীগ নেত্রীকে মঞ্চে এনেছেন ?
উত্তরে হাসনাত কাইয়ুম বলেন, ‘আমাদের রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের কিংবা রাষ্ট্রচিন্তা’র দুইটারই ঘোষিত শত্রু আছে। একটা হচ্ছে গণহত্যাকারী কিংবা গণহত্যাকারীর আদর্শ যারা লালন করে। আরেকটা হচ্ছে যারা পাচারকারী। আওয়ামী লীগ এবং জামায়াতে ইসলামী দুইটা দলকে আমরা মনে করি গণহত্যাকারী দল। আমারা দুইটা শত্রুর সাথে আসলে কখনো ঐক্যবদ্ধ হবো না।

তখন এক সাংবাদিকরা জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ফাতেমা জোহরা আক্তারের মতবিনিময় সভার মঞ্চে বসা এবং বক্তব্য রাখার ব্যাপারে তাকে প্রশ্ন করলে এডভোকেট হাসনাত কাইয়ূম বলেন, ‘আমার জানা নাই আসলে এখানে কোনো সহ-সভাপতি আছে কি না। ফাতেমা জোহরা তার পজিশন ক্লিয়ার করবে। আমরা যদ্দূর জানি, আমরা যখন থেকে সংস্কারের আলাপ করতেছিলাম, সংস্কারের রাজনীতি করতেছিলাম, তখন থেকে আমরা দেখছি তিনি আমাদের রাজনীতির প্রতি সহানুভুতিশীল। উনি আওয়ামী লীগের পদপদবীতে আছে বইলা আমি শুনি নাই। যদি থাকে তাইলে উনারটা উনি পরিষ্কার করবেন। আর এই না জানার জন্যে আমি আপনাদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করতেছি, ক্ষমা প্রার্থনা করছি।’

হাসনাত কাইয়ূমের বক্তব্য শেষে জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ফাতেমা জোহরা আক্তার বলেন, ‘আমি মহিলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতির পরিচয় কখনো দেইনি। কখনো আওয়ামী লীগ করিনি। মিটিং, মিছিলে কোনোদিন যাইনি। উইম্যান চেম্বারের পরিচয়ে চলেছি। আওয়ামী লীগের সময়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে জাতিসংঘে সফরসঙ্গী হওয়ার বিষয়ে তখন তাকে প্রশ্ন করা হলে ফাতেমা জোহরা আক্তার বলেন, আমি এফবিসিসিআই এর প্রতিনিধি হিসেবে জাতিসংঘে গিয়েছি। মহিলা আওয়ামীলীগের কমিটির মেয়াদ শেষ। আমি পদত্যাগ না করলেও আওয়ামী লীগের পরিচয় আমি দেই না। ‘
স্থানীয় রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বলে জানা গেছে, ফাতেমা জোহরা আক্তারের স্বামী এডভোকেট শাহ আজিজুল হক কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্মসাধারণ সম্পাদক এবং পিপি ছিলেন। আর ফাতেমা জোহরা জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হিসেবে এখনো দায়িত্বে আছেন। ফাতেমা জোহরা আক্তার কিশোরগঞ্জ থেকে সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য পদে দলীয় মনোনয়নও চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি দলীয় মনোনয়ন পাননি। ফাতেমা জোহরা আক্তার জেলা উইম্যান চেম্বারেরও সভাপতি। সাবেক রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের সঙ্গে জোহরা দম্পতির ঘনিষ্ঠতার কথা সবাই জানে।

‘দেশ বাঁচাতে প্রয়োজন- সংস্কার, সমঝোতা ও নির্বাচন’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন সোহেল আহমেদ। মো. জহিরুল ইসলামের সঞ্চালনায় এতে অন্যদের মধ্যে অধ্যাপক বিমল সরকার, অধ্যাপক সাখাওয়াত হোসেন, খাইরুল মোমেন স্বপন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।