# Tags

ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য ও প. প. কর্মকর্তা ডা. কিশোর কুমার ধরকে নিয়ে আবারো ফেসবুকে ঝর উঠেছে

মুহাম্মদ কাইসার হামিদ,কুলিয়ারচর(কিশোরগঞ্জ):

ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর কর্মকর্তারা এখনো জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত যোদ্ধাদের কাজ করে দিতে অনিহা প্রকাশ করছে এমন অভিযোগ করে গত ২৩ মার্চ রোববার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ডা. কিশোর কুমার ধরকে নিয়ে https://www.facebook.com/share /16D8w3uweS/ লিংক এর মাধ্যমে একটি লিখা পোষ্ট করেছে “Jahidul Islam” নামে একটি ফেসবুক আইডি থেকে। শুধু তাই নয় ওই পোস্টটি ৭৬জন ফেসবুক আইডিতে টেগ করেছে ওই আইডি ব্যবহারকারি। এতে তিনি আরো লিখেছেন “প্রতিনিয়ত মানুষ হেনস্তার শিকার হচ্ছে। বিভিন্ন অজুহাত দিয়ে তারা আহত যোদ্ধাদের একটি সিগন্যাচার নিয়ে গুরাচ্ছে ! জুলাইয়ের যোদ্ধাদের জন্যই এই নতুন বাংলাদেশ। এখনই উনারা যে আচরণ করছে বাহ বাহ। কি পেলো তারা দেশের জন্য এতো কিছু করে। ধিক্কার জানাই ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর কর্মকর্তাদের হীন মন-মানসিকতার। ফ্যাক্ট: ডা: কিশোর কুমার ধর।
এই পোস্টে “SF Indad Sojol” নামে এক ফেসবুক ব্যবহারকারি আইডি থেকে কমেন্ট করে লিখেছেন “১০০ বার গেছি তাই এই সিগনেচারের আশা ছেড়ে ডকুমেন্ট ছিঁড়ে ফেলেছি”। এছাড়া আরো নেগেটিভ মন্তব্য করে অনেকেই অনেক কিছু লিখে কমেন্ট করেছেন। এনিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ডা. কিশোর কুমার ধর এর বিরুদ্ধে ঝড় উঠেছে।

এর আগে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগী সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) এর আজীন সদস্য ডা. কিশোর কুমার ধর ডি.জি. অফিসকে ম্যানেজ করে নিয়মবহির্ভূত ভাবে বন্দরনগরী ভৈরবের মত গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হিসাবে নিয়োগ নিয়ে সুশীল সমাজের মাঝে আলোচনার ঝড় উঠেছে এমন মন্তব্য করে “ভৈরব কুলিয়ারচর নাগরিক ঐক্য ফোরাম” নামক একটি ফেসবুক আইডি থেকে গত ২০ ফেব্রুয়ারি https://www.facebook.com/share/15iKccZkUr/ লিং এর মাধ্যমে একটি লিখা পোষ্ট করা হয়েছে। যাহা অনেকের দৃষ্টি গোচর হয়েছে।
এ লিখায় উল্লেখ করা হয়েছিলো ডা. কিশোর কুমার ধর নবম গ্রেডের একজন কমর্কতা হয়ে ষষ্ঠ গ্রেডের কর্মকতা হিসাবে কিভাবে নিয়োগ পেলেন তা নিয়ে ভৈরবের সর্বত্র আলোচনা চলছে। গত ৫ আগষ্ট শেখ হাসিনা দেশ ত্যাগের পর আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগী সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) এর সকল চিকিৎসক যখন আত্মগোপনে সেখানে ডা. কিশোর কুমার ধর স্বাচিপের আজীবন সদস্য হয়ে কিভাবে ভৈরবের মতো জনবসতি ও একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) হিসেবে কি ভাবে পদোন্নতি পেলেন?
এব্যাপারে নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক একজন সিনিয়র চিকিৎসক বলেন, ডা. কিশোর কুমার ধর নবম গ্রেডের একজন কমর্কতা হয়ে ষষ্ঠ গ্রেডের কর্মকতা হিসাবে কিভাবে নিয়োগ পেলেন? তা আমার বোধগম্য নয়। এছাড়া স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সকল ডা. যখন আত্মগোপনে সেখানে ডা. কিশোর কুমার ধর স্বাচিপের আজীবন সদস্য হয়ে কিভাবে ভৈরবের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গার পদোন্নতি পায়? তার অতীত কর্মকান্ডের ছবি দেখে কারোরই বুঝার বাকি নেই সে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের দোষর ও দালাল ছিলেন। তার কিছু ফাইল ছবিতে এসব তথ্য ফুটে উঠেছে।

বর্তমান সরকার যেখানে সংস্কার করতে গিয়ে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের দোষর ও দালালদের উৎখাত করতে মাঠে নেমেছে সেখানে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন সাচিপের আজীবন সদস্য ডা. কিশোর কুমার ধর ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন এ নিয়ে ভৈরবের জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এ রহস্য উদঘাটনে মাঠে নেমেছে অনেকেই।
ডা. কিশোর কুমার ধর গত ৬ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। গত ৫ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. এবিএম আবু হানিফের স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে তাকে এই পদে নিয়োগ দেয়া হয়। এর আগে তিনি কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন থানার গোপদিঘী ইউনিয়নের উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে মেডিকেল অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। মিঠামইন উপজেলার গোপদিঘী ইউনিয়নের উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে মেডিকেল অফিসার হিসেবে দীর্ঘদিন কর্মরত থেকে গত ৬ ফেব্রুয়ারি নিজ জন্মভূমি ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা (ভারপ্রাপ্ত) কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন।
কিশোর কুমার ধর ১৯৮৮ সালে ৪ নভেম্বর জন্ম গ্রহণ করেন। তার নিজ বাড়ি ভৈরব পৌর শহরের গাছতলাঘাট এলাকায়। বাবার নাম গোপাল ধর। তিনি একজন কাপড়ের ব্যবসায়ী ছিলেন। মা দীপা সাহা একজন প্রধান শিক্ষিকা। ডা. কিশোর কুমার ধর ২০০৫ সালে ভৈরব সরকারি হাজী আসমত কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে ২০১২ সালে সিলেট উসমানী কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করেন ও ইন্টার্নি করেন। ২০১৪ সালে ৩৩তম বিসিএস এর মাধ্যমে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক হিসেবে যাত্রা শুরু করেন।