# Tags

নড়াইলের তারাশি গ্রাম অশান্ত হয়ে উঠেছে

হুমায়ুন কবীর রিন্টু , নড়াইল প্রতিনিধি: নড়াইল সদর উপজেলার মাইজপাড়া ইউনিয়নের তারাশি গ্রাম অশান্ত হয়ে উঠেছে। গত ২ দিনে ৪টি বাড়ি ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। একজনকে কুপিয়ে মারাতœক রক্তাক্ত জখম করা হয়েছে। একের পর এক ভাংচুর, লুটপাট ও তান্ডবে এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব শত্রæতার জের ধরে দীর্ঘ দিন ধরে দু’টি পক্ষের মধ্যে একের পর এক অঘটন ঘটেই চলেছে। সোমবার (৩০ অক্টোবর) রাতে তারাশি গ্রামের মুন্সি বাড়ি এবং মোবারক মোল্যার ছেলে জলফু মোল্যার দোকান ভাংচুর করে প্রতিপক্ষের লোকজন। এর আগে রোববার (২৯ অক্টোবর) সকালে এ গ্রামের মুনসুর সিকদারের বাড়ি, মৃত গোলাম সিকদারের ছেলে জসিম সিকদার ও অসিম সিকদারের বাড়ি ঘর ভেঙ্গে তছনছ করে একই সন্ত্রাসীরা।
সরজমিন সোমবার (৩০ অক্টোবর) অনুসন্ধানে গেলে স্থানীয়রা জানায় দু’টি পক্ষের দ্ব›েদ্বর জন্য এলাকা অশান্ত হয়ে উঠেছে। তারাশি গ্রামের জসিম সিকদারের স্ত্রী ফিরোজা বেগম জানান, প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসী ওমর মোল্যা, হুমায়ুন, জাফর, বাচ্চু, শরিফুল, মাসুম, সবুজ, বিল্লাল, সাখাওয়াত, সোহাগ সহ আরোও অনেকে রোববার (২৯ অক্টোবর) সকালে তাদের বাড়ি হামলা চালালে তার স্বামী সহ বাড়ির সকল পুরুষ সদস্যরা বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়। এ সময় তারা ঘরবাড়ি ভাংচুর করে ৩ভরি স্বর্নালংকার, নগদ ২ লাখ টাকা সহ মূল্যবান মালামাল নিয়ে যায়। ফ্রিজ,আলমিরা,শোকেস সহ অনেক দামি মালামাল কুপিয়ে নষ্ট করে রেখে গেছে। এতো ক্ষতি করেছে যে, রান্না করে খাওয়ার মত কোন পরিবেশ নেই। ধান চাল সবই নিয়ে গেছে। থালা বাসন ভেঙ্গে ফেলেছে। বিছানা, কাপড় নিয়ে গেছে। যা নিতে পারেনি নষ্ট কওে রেখে গেছে এবং পুকুরে ফেলে দিয়েছে।
জসিমের মা পটল বেগম কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, সন্ত্রাসীরা তার সবকিছুই শেষ করে দিয়েছে। তার তিনটি ছেলে প্রাণ ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। সন্তানদের বাঁচাতে তিনি প্রশাসনের নিকট আকুতি জানান। ওইসব সন্ত্রাসীরা ৪ বছর আগে তার স্বামী গোলাম সিকদারকে নৃশংস ভাবে হত্যা করে। হত্যা ঘটনায় মুনসুর সিকদার বাদি হয়ে তাদের নামে মামলা করে। মামলাটি চলমান রয়েছে। ওই মামলা মিমাংসার জন্য তারা এভাবে অত্যাচার নির্যাতন চালাচ্ছে।
অনুসন্ধানে আরোও জানা যায়, শনিবার (২৮ অক্টোবর) রাতে তারাশি গ্রামের সরোয়ার মোল্যা (৫০) স্থানীয় মাইজপাড়া বাজার হতে নিজ বাড়িতে ফিরছিলেন। পথিমধ্যে কল্যাণখালি এলাকায় পৌছালে ওৎ পেতে থাকা সন্ত্রাসীরা তার মোটরসাইকেলের গতি রোধ করে। এরপর তার হাত-পা ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় উপর্যুপরি কুপিয়ে তাকে মারাতœক রক্তাক্ত জখম করে। মুমুর্ষ অবস্থায় তাকে নড়াইল সদর হাসপাতালে নেয়া হলে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সরোয়ার হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। তার অবস্থা খুবই আশংকাজনক। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন বেঁচে থাকলেও সে আর স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবেন না। সরোয়ারের উপর হামলা ঘটনাকে কেন্দ্র করে একের পর এক ভাংচুরের ঘটনা ঘটছে। এদিকে সরোয়ারের পক্ষের লোকজনের দাবি জসিম ও অসিমের নেতৃত্বে সরোয়ারের উপর হামলা চালানো হয়েছে। তবে জসিমের পরিবারের সদস্যদের দাবি সরোয়ারের উপর হামলার ঘটনার সাথে জসিম ও অসিম জড়িত নন।
সচেতন মহলের দাবি সরোয়ারের উপর হামলা এবং বাড়িঘর ভাংচুরের সাথে জড়িতদের সকলকেই আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা জরুরী। তা-না হলে এলাকায় শান্তি ফিরে আসবে না। দু’টি পক্ষের দ্ব›দ্ব সংঘর্ষের কারনে এলাকার শান্তিপ্রিয় মানুষেরা চরম দুশ্চিন্তায় আছেন। নড়াইল সদর থানার ওসি ওবায়দুর রহমান জানান,এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অপরাধিদের আটক করে আইনের আওতায় আনা হবে।

নড়াইলের তারাশি গ্রাম অশান্ত হয়ে উঠেছে

পুলিশ ও সাংবাদিক কাউকেই বিএনপি ছাড় দেয়