পঞ্চগড়ে দুইদিনের ব্যবধানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কমেছে ৪.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস

সামসউদ্দীন চৌধুরী কালাম,পঞ্চগড়-উত্তরের শীতের জেলা পঞ্চগড়ে জমে উঠতে শুরু করেছে শীত। মিগজাউমের প্রভাবে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকার মধ্যেই হু হু করে নামতে শুরু করেছে সর্বনি¤œ তাপমাত্রা। দুইদিনের ব্যবধানে এখানে সর্বনি¤œ তাপমাত্রা কমেছে ৪ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল রোববার দেশের সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করেছে তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার। এর আগে গত শুক্রবার এখানে সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর গত শনিবার এখানে সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ছিল ১৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। নামতে শুরু করেছে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রাও। গত শুক্রবার তেঁতুলিয়ায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হলেও শনিবার দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস কমে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ২৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বোচ্চ ও সর্বনি¤œ তাপমাত্রার ব্যবধান কাছাকাছি চলে আসায় রাতের বেলা তীব্র শীত অনুভ‚ত হচ্ছে।
শনিবার আকাশে মেঘ থাকায় দিনভর সূর্যের দেখা মেলেনি। বিকেল হতেই শুরু হয় উত্তরের হিমেল হাওয়া। অনুভ‚ত হতে থাকে কনকনে শীত। সন্ধ্যা নামতেই শুরু হয় মাঝারী থেকে ভারী কুয়াশা। গতকাল রোববার সকাল পর্যন্ত ভারী কুয়াশা ঝরতে থাকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির ফোঁটার মতো। দুপুর পর্যন্ত যানবাহন চলাচল করে হেল লাইট জ্বালিয়ে। দুপুর পর্যন্ত ভারী কুয়াশার চাঁদরে ঢেকে থাকে মাঠ-ঘাট-কান্দর। দুপুর ১২টার পর থেকে দেখা মেলে সূর্যের। তবে উত্তরের কনকনে হিমেল বাতাস প্রবাহ অব্যাহত থাকায় সূর্যের উত্তাপ গায়ে লাগেনি। আবার বেলা গড়াতেই বাতাসের প্রবাহ বাড়তে থাকায় দিনের বেলাতেও শীত অনুভ‚ত হতে থাকে।
মৌসূমের এমন শীতলতম দিনে চরম দুর্ভোগে পড়ে জেলার দুঃস্থ ও খেটে খাওয়া লোকজন। কনকনে শীত সাধ্যমত গরম কাপড় গায়ে জড়িয়েই কাজে বেরিয়েছে শ্রমজীবী মানুষরা। অনেকে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা চালাচ্ছে। এদিকে শীত জেঁকে বসার সাথে সাথে সরগরম হয়ে উঠছে শীতবস্ত্রের দোকানগুলো। জেলা শহরের সেন্ট্রাল প্লাজা, এইচকে প্লাজা, সিনেমা হল মার্কেটসহ বিভিন্ন বিপনী বিতানগুলোতে নতুন শীতবস্ত্রের জন্য খদ্দেরদের চাপ লক্ষ্য করা গেছে। অবস্থাসম্পন্ন ও মধ্যবিত্তরা সাধ্যমত এ সকল দোকান থেকে সোয়েটার, জ্যাকেট, শাল চাদর ক্রয় করছেন। নতুন এসব শীতবস্ত্রের দামও বেশ চড়া বলে ক্রেতারা জানিয়েছেন। তবে সবচেয়ে বেশি ভিড় লক্ষ্য করা গেছে ফুটপাথের মৌসূমী পুরনো শীতবস্ত্রের দোকানগুলোতে। তবে চাহিদার চেয়ে যোগান কম থাকায় মৌসূমী ব্যবসায়ীর তাদের পুরাতন কাপড়ের দাম বেশি হাঁকছে বলে ক্রেতাদের অভিযোগ।
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ জানান, গত তিনদিন ধরে তেঁতুলিয়ায় সর্বনি¤œ তাপমাত্রা কমছে। রোববার সকাল ৯টায় এখানে সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। আকাশে এখনো মেঘ রয়েছে। দু/চার দিনের মধ্যে মেঘ কেটে যাবে। মেঘ কেটে আকাশ পরিস্কার হলে উত্তরের বাতাস পুরোপুরি প্রবাহিত হওয়া শুরু করলে সর্বনি¤œ তাপমাত্রা আরও কমবে। তিনি আরও জানান, ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে এই অঞ্চলে মৃদু থেকে মাঝারী শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।