# Tags

নড়াইলে খেজুর সন্ন্যাসী পূজা অনুষ্ঠিত 

হুমায়ুন কবীর রিন্টু , নড়াইল প্রতিনিধি :নড়াইলে খেজুর সন্নাসী নিয়ে মানুষের কৌতুহলের শেষ নেই। গত তিন দিন ধরে নড়াইলের সর্বত্র এ আলোচনা সমালোচনা চলছে। কেউ বলছেন এটা তন্ত্র মন্ত্রের ব্যাপার। কেউ বলছেন এটা ধর্মীয় বিশ্বাসের ব্যাপার। আবার কেউ কেউ বলছেন এটা কেবলমাত্র বুদ্ধি ও কলা কৌশলের ব্যাপার ছাড়া আর কিছুই না। ঘটনা যাই হোক যারা এ খেজুর সন্নাসী হিসেবে খেজুর গাছে উঠে গাছের উপর দিয়ে হাটা হাটি করেছেন, তাদের বর্তমান শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছেন স্থানীয়রা।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) বিকেলে অনেকেই নড়াইল পৌরসভার ভাদুলিডাঙ্গা এলাকায় সুজয় বিশ্বাস’র বাড়িতে যান। উদ্দেশ্য একটাই খেজুর সন্নাসী হওয়ার কাজে নিয়োজিত যারা ছিলেন, খেজুর গাছের একেবারে উপরে উঠার পর কাটাযুক্ত খেজুর ডগার উপর দিয়ে যারা হেটেছেন, তারা সুস্থ স্বাভাবিক আছেন কি-না? বাস্তবে দেখা গেছে সবাই সুস্থ আছেন। কৌতুহলীদের মধ্যে রয়েছেন নড়াইলর লোহাগড়া উপজেলার মিঠাপুর গ্রামের রাজু শেখ,নড়াইল পৌরসভার ভওয়াখালি গ্রামের তাহের মোল্যা, বনগ্রামের কৃপা বিশ্বাস সহ অনেকে। তারা জানান, খেজুর সন্নাসী দেখতে তারা গত রোববার এখানে আসছিলেন। আবার এসেছেন খেজুর সন্নাসী হওয়াদের কেউ অসুস্থ হয়েছেন কি-না? সেটা জানার কৌতুহলে তারা আসছিলেন। বাস্তবেই দেখে ও জেনে গেলেন কেউ অসুস্থ হননি।
রবিবার (১৩ এপ্রিল) বিকালে নড়াইল পৌর সভার ভাদুলীডাঙ্গা এলাকায় ‘খেজুরের কাঁদি’ পাড়ার এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।  যা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে খেজুর সন্ন্যাসী পূজা নামে অভিহিত।
এসময় খেজুর সন্ন্যাসী উৎসব দেখতে সনাতন ধর্মাবলম্বীসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ ভাদুলীডাঙ্গা এলাকায় ছুটে আসেন।
সন্ন্যাসীরা তন্ত্র-মন্ত্র ও বন্দনার মাধ্যমে খালি পায়ে খেজুর গাছের চূড়ায় উঠে অক্ষত অবস্থায় খেজুর নিয়ে নিচে নেমে আসেন। তন্ত্র-মন্ত্রের কারণে কাঁটা ফোটে না এমনই বিশ্বাস তাদের। গ্রাম বাংলার এই খেজুর সন্ন্যাসী পূজা ঘিরে নড়াইলে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহের আমেজ সৃষ্টি হয়।
এলাকা সূত্রে জানা যায়,পুণ্যের আশায় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন এই খেজুর সন্ন্যাসী পূজা করে থাকেন। এই খেজুর খেলেও পুণ্য হয়। সেই আশায় গাছ থেকে খেজুর পাড়ার পর কাঁচা খেজুর অনেকে খেয়ে থাকেন। অনেকে আবার বাড়িতে নিয়ে ঘরে রেখে দেন। এই খেজুর দিয়ে সোমবার সকালে শিব পূজা করবে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ।
খেজুর গাছে উঠার আগে গাছের চারিদিকে ১২ থেকে ১৬ জন সন্ন্যাসী ঢাক-ঢোলের তালে তালে গাছের পাশ দিয়ে ঘুরতে থাকেন। গাছরে জরাই ধরে গোসাই পড়তে থাকেন বিভিন্ন মন্ত্র-তন্ত্র। ঘুরতে ঘুরতে এক সময় দ্রুত গতিতে খেজুর গাছ বেয়ে ওপরে উঠতে শুরু করেন সন্ন্যাসীরা । একটি খেজুরগাছে ৩ থেকে ৪জন সন্ন্যাসী খেজুরের কাঁদি পাড়তে গাছে ওঠেন।
ভাদুলিডাঙ্গা এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা সুকান্ত বিশ্বাস জানান,প্রতি বছরের ন্যায় এ বছর ও আমাদের গ্রামে খেজুর সন্ন্যাসী পূজা অনুষ্ঠিত হয়। এ খেজুর সন্ন্যাসী উৎসব দেখতে দূর দূরান্ত থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বীসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ আসেন।