পঞ্চগড়ে ফুলেল ভালবাসায় সিক্ত সাফজয়ী অনুর্ধ্ব-১৬ নারী ফুটবলার ইয়ারজান

পঞ্চগড় প্রতিনিধি-নিজ জেলায় ফিরে ফুলেল ভালবাসায় সিক্ত হয়েছেন সাফ চ্যাম্পিয়নশীপ জয়ী অনুর্ধ্ব-১৬ নারী ফুটবলার ইয়ারজান বেগম। গতকাল শনিবার শনিবার সকালে বাস যোগে পঞ্চগড়ে পৌছান ইয়ারজন ও তার কোচ টুকু রেহমান।
দুপুরে টুকু ফুটবল একাডেমীর আয়োজনে তাকে নিয়ে একটি খোলা পিকআপে করে পঞ্চগড় শহর জুড়ে আনন্দ মিছিল করা হয়। এরপর সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের খোপড়াবান্দি গ্রামে নিজ বাড়িতে ফেরেন তিনি। এসময় স্থানীয়রা ফুল ছিটিয়ে এবং ফুলের তোড়া দিয়ে তাকে বরণ করে নেন। সাফ চ্যাম্পিয়নশীপ জয়ী অনুর্ধ্ব-১৬ কাপ জেতার পরে দীর্ঘ তিন মাস পরে বাসায় ফিরলেন ইয়ারজান। সন্তানকে কাছে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন মা রেনু বেগম সহ পরিবারের সদস্যরা। সন্তানকে জড়িয়ে ধরে চুমু খান মা রেনু বেগম। পরে ইয়ারজান তার মা-বাবা, দাদা-দাদী ও তার ফুটবল কোচের গলায় ফুলের মালা পরিয়ে দেন। নিজ এলাকায় ফিরে স্থানীয় সহ স্বজনদের এমন ভালবাসায় মুগ্ধ ইয়ারজান।
ইয়ারজান বেগম বলেন, সাফ খেলার পরে প্রথম বাসায় আসলাম। আমার খুব ভালো লাগছে। আমি কখনোই কল্পনাই করিনি আমার বাসায় এতো লোক আসবে। আমি সকলের কাছে দোয়া কামনা করি সকলে আমার জন্য দোয়া করবেন। আমার পরিবারের জন্য দোয়া করবেন। আমি যেন জাতীয় দলে খেলে দেশের জন্য ভালো কিছু করতে পারি। আপাতত আমি ক্লাব লীগে খেলার জন্য সিরাজ ক্লাবের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়েছি। আপাতত সেখানে খেলবো।
ইয়ারজানের মা রেনু বেগম বলেন, দীর্ঘদিন পরে মেয়েকে কাছে পেলাম আজ। আমার মেয়ে সেদিন (সাফ চ্যাম্পিয়নশীপে) ভালো খেলেছে। আমি সবার কাছে আমার মেয়ের জন্য দোয়া চাই। সে যেন আগামীতে ভালো খেলতে পারে। ইয়ারজানের বাবা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, কারো সন্তান যদি দীর্ঘ দিন বাইরে থাকে তার যে কি বেদনা যার সন্তান আছে সেই বোঝে। এই তিনটা মাস ইয়ারজানকে ছাড়া কিভাবে যে কেটেছে তা বলে বোঝাতে পারবোনা। আমার মেয়ে যে খেলেছে দেশের হয়ে আপনারা তার জন্য দোয়া করবেন। সে যেন আরো ভালো করে খেলতে পারে। জাতীয় দলে হয়ে খেলে দেশের সুনাম বয়ে নিয়ে আসতে পারে।
ইয়ারজানের কোচ ও টুকু একাডেমীর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক টুকু রেহমান বলেন, সারা দেশ জানে ইয়ারজান যে সাফ চ্যাম্পিয়নশীপে ভালো খেলছে। সে বাংলাদেশকে একটি ট্রফি এনে দিয়েছে। সেরা গোল রক্ষকের পুরস্কার পেয়েছে। এটা আমি টুকু ফুটবল একাডেমী ও পঞ্চগড়ের পক্ষ থেকে তাকে ধন্যবাদ জানাই। আপনারাও আপনাদের সন্তানদের ফুটবল প্রশিক্ষণে পাঠান। তারাও যেন ভালো খেলোয়ার হয়ে দেশের জন্য ভালো কিছু করতে পারে।
জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম বলেন, আমরা ইয়ারজানসহ সাফজয়ী অনুর্ধ্ব-১৬ এর চার নারী ফুটবলারকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সংবর্ধনার আয়োজন করবো। এছাড়া জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইয়ারজানের জন্য একটি পাকা ঘর ও স্বাস্থ্য সম্মত শৌচাগার নির্মাণ করে দিচ্ছি। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কৃতি খেলোয়ারদের জন্য শুভ কামনা রইল। #