প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ
গত ২১আগস্ট একটি জাতীয় দৈনিকের প্রথম পৃষ্ঠায় “পাপুয়া নিউগিনির শীর্ষ ধনী সাবেক এমপি ওয়াহেদ” শিরোনামে ও একটি বেসরকারী টেলিভিশনে দুটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদ দুটি আমার দৃষ্টি আকর্ষণ হয়েছে। এ সংবাদটি ভিত্তিহীন,অসত্য,বানোয়াট, উদ্দেশ্য প্রণোদিত ও হলুদ সাংবাদিকতার বহিঃপ্রকাশ। যিনি এ সংবাদটি প্রকাশ করেছেন তার এ ব্যাপারে আরও যাঁচাই বাছাই করে সংবাদটি প্রকাশ করা প্রয়োজন ছিল। পুরো সংবাদটি পড়লে বুঝা যাবে ওই সাংবাদিক কারও এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেছেন। এতে আমাকে সামাজিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন ও মান সম্মানেরহানী ঘটেছে। আমি এ মিথ্যা সংবাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
প্রকৃতপক্ষে আমি একজন রেমিটেন্সযোদ্ধা। দেশ থেকে বিদেশে টাকা পাচার নয়। বরং, আমি বিদেশে অর্থ উপার্জন করে সেই টাকা বৈধভাবে দেশে নিয়ে আসি। একজন সফল রেমিটেন্সযোদ্ধা হিসাবে ইতোমধ্যে আমাকে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে তিনবার পুরস্কৃত করা হয়েছে। আমার প্রতিটি টাকাই বৈধ। যদি কেউ আমাকে অর্থ পাচারকারী হিসাবে প্রমান করতে পারে তাঁকে পুরস্কৃত করা হবে। আমি একসময় পাপুয়ানিউগিনির নাগরিক ছিলাম। আমার ইন্দোনেশিয়ান কোনো পাসপোর্ট নেই। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার পূর্বেই আমি আনুষ্ঠানিকভাবে ওই দেশের নাগরিকত্ব সারেন্ডার করে দিয়ে এসেছি। সংবাদ দুটি প্রকাশ হওয়ায় স্থানীয় নেটিজেনদের মাঝে বিরূপ প্রভার পড়েছে। তারা এ মিথ্যা সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়ে নেট জগতে ঝড় তোলেছেন। আমি যদি অর্থ পাচারকারীই হতাম তাহলে আমার পক্ষে নেটিজেনরা ঝড় তোলতো না। যে সব হলুদ সাংবাদিকরা আমার বিরুদ্ধে ঢাকায় বসে স্থানীয় কয়েকজনের ইন্দনে রিপোর্টটি করেছেন তারা সরেজমিনে এসে ভালুকার আপামর জনগণের সাথে কথা বলে দেখুক আমি অর্থ পাচারকারী না রেমিটেন্স সেনাপতি। যারা আমার বিরুদ্ধে রিপোর্টটি করিয়েছেন তারা গত ১৫বছর আগে ছিল কী? বর্তমানে তারা কত টাকা ও সম্পদের মালিক।
আমার গ্রামের বাড়িতে পৈত্রিক সূত্রে অনেক জমি পাই। বর্তমানে আঙ্গারগাড়া গ্রামে যে বাড়ি রয়েছে সেটি আমার পৈত্রিকসূত্রে প্রাপ্ত। পাকিস্তান আমলে আমার বাবা এবং চাচারা অঢেল সম্পদের মালিক ছিলেন। তৎকালীন সময়ে তাঁদের নামে জমি ক্রয় করা যেতো না। আমার পরিবারের যে সম্পদ রয়েছে তার হিসাবে প্রতিবছর আয়কর রিটার্নের জমা দিচ্ছি এবং প্রতিবছর সরকারী কর পরিশোধ করছি। দেশে ও দেশের বাইরে আমার যে সম্পদ ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সংবাদে জমি সংক্রান্ত যে সব তথ্য প্রকাশ করেছে অধিকাংশই মিথ্যা ও ভূয়া। আঙ্গারগাড়া মৌজার ৩০০দাগে আমার কোনো জমিই নেই। ঢাকায় উত্তরা ৭ নম্বর সেক্টরে কোনো বাড়ি নেই। আশুলিয়ায় কোনো কারখানা ও আঙ্গারগাড়া মৌজায় ওয়াহেদ ফিড মিল নামে কোনো ফিড মিল নেই। আমি কোনো বন ও খাস জমি দখল করি নাই। আমার এলাকায় বিভিন্ন মৌজায় পার্ট বনের জটিলতা রয়েছে। যা আমি মিমাংসার জন্য জাতীয় সংসদে বক্তব্য রেখেছিলাম। আঙ্গারগাড়া বাজার সংলগ্ন যে তিনটি ভবন রয়েছে, তা ক্রয়কৃত রেকর্ডিয় জমির উপর নির্মিত। ওই সব দাগে কোনো বন ও খাসের জমি নেই। প্রশ্ন হলো আমি কিভাবে বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচার করলাম। এদেশে আমার কোনো ঠিকাদারি ও ব্যবসায় নেই। বাংলাদেশে আমার যেসব সম্পদ রয়েছে, তা আমি বিদেশে চাকুরি ও ব্যবসা করে বৈধভাবে দেশে টাকা পাঠিয়ে করেছি। সেই টাকা দিয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় জমি রেখে বাসা-বাড়ি করেছি।
আমি ১৯৮৮ সালে অনার্স শেষ করে পাপুয়া নিউগিনিতে যাই এবং সেখানে পাপুয়ানিউগিনি ইউনিভার্সিটি থেকে এমবিএ করি। এমবিএ শেষে পাপুয়ানিউগিনিতে সরকারী স্কুল অ্যান্ড কলেজে ৫বছর শিক্ষকতা করি। ওই ৫ বছর দেশে কোনো টাকা না পাঠিয়ে তা সঞ্চয় করি এবং সঞ্চিত টাকায় ওই দেশে প্রথমে একটি ফাস্ট ফুডের দোকান করি, পরবর্তীতে আমার তীলে তীলে পরিশ্রমের টাকায় কোম্পানীগুলো গড়ে তুলি।
বর্তমানে আমার এসব প্রতিষ্ঠানে একশ’র মতো বাংলাদেশি রয়েছেন। তাদেরকে আমার খরচে বিদেশে নিয়েছি। এ ছাড়াও ওই দেশের ৫শতাধিক লোক আমার প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছে। পাপুয়া নিউগিনিতে বর্তমানে আমি ফরেন ইনভেস্টার হিসাবে রয়েছি। পাপুয়ানিউগিনি ছাড়া পৃথিবীর অন্য কোথায় আমার কোনো ব্যবসা বাণিজ্য নেই।আমার ব্যবসা বাণিজ্য দেখে আমার প্রতিপক্ষের এতো ঝলে কেন? প্রয়োজনে আপনারা এসে ব্যবসা করেন।
এছাড়া, প্রায় ৩শতাধিক ব্যক্তিকে পবিত্র হজ্বব্রত পালন করিয়েছি। আঙ্গারগাড়া ইউনাইটেড উচ্চ বিদ্যালয়ের বাউন্ডারি ওয়াল ও জমিসহ তিন তলা বিশিষ্ট প্রশাসিক ভবন, দৌলা আল কুদ্দুস দাখিল মাদ্রাসার একতলা প্রশাসনিক ভবন নির্মান,ডাকাতিয়া ইউনিয়নের সকল হাই স্কুল থেকে এসএসসিতে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত সকল ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে ১০হাজার টাকা করে বৃত্তি প্রদান চলমান। অর্থহীন পরিবারের লোকজনকে চিকিৎসা খরচ, ছেলে-মেয়েদের বিয়ে দেয়া, লেখা-পড়ার খরচ দেয়া চলমান। স্থানীয় সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক কর্মীদের প্রয়োজনীয় সহায়তা করি। উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের ৪র্থ শ্রেনীর ১২০জন শিক্ষার্থীর মাঝে প্রতিবছর উপবৃত্তি প্রদান করছি। ৩২০জন হতদরিদ্র পরিবারকে টিনের ঘর নির্মাণ করে দিয়েছি। করোনাকালীন সময় ফিল্ড হাসপাতাল,ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আইসিও ৫টি বেড ও অক্সিজেন সিলিন্ডার প্রদান করি এবং ভালুকা উপজেলার ২০হাজার মানুষের মাঝে নগদ অর্থ,খাদ্য সামগ্রি,স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রি,সেনিটাইজার ও মাক্স বিতরণ করি। উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও পৌরসভায় প্রায় এক হাজার মসজিদ মাদ্রাসায় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন ধরনের অনুদান প্রদান করেছি এবং উপজেলার এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের ১০হাজার করে শিক্ষাবৃত্তি দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে।আমার প্রতিপক্ষরা সাংবাদিককে অসত্য ও বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে বানোয়াট ও মানহানিকর সংবাদ পরিবেশন করিয়েছেন।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে আমি বিপুল ভোটে এমপি নির্বাচিত হই। ওই নির্বাচনে আমার প্রতিপক্ষ প্রার্থীর ভরাডুবির কারণে অনেকটা পাগল হয়ে গেছেন। গত নির্বাচন ছিল অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরেপক্ষ নির্বাচন। ওই নির্বাচনে তার ভরাডুবি হওয়ার কারণে আমাকে নানা ভাবে হয়রানি করে আসছেন। এ সংবাদটি তারই বহিঃপ্রকাশ।
মোঃ আব্দুল ওয়াহেদ
সাবেক সংসদ সদস্য
ময়মনসিংহ-১১।