জমি সংক্রান্ত মিথ্যা মামলায় ১০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি, ভুক্তভোগীর থানায় অভিযোগ

জাজিরা(শরীয়তপুর) প্রতিনিধিঃ-শরীয়তপুর জেলার জাজিরা উপজেলার জাজিরা পৌরসভা ৪ নং ওয়ার্ড আক্কেল মোহাম্মদ মুন্সীকান্দির বাসিন্দা আলেকজান বিবি মূল দলিল মারফতে ৩০ বছরের ঊর্ধ্বে বসবাস করে আসছেন।
ভুক্তভোগীর অভিযোগ মতে, অনুসন্ধান করে দেখা যায়, ১৮!০৬!১৯৯০ সালে ১৫০৪ নং দলিল মূলে ৫৮ নং দাগে ১৮ শতাংশ জমি আলেকজান বিবি ও মাইনুদ্দিন চৌকিদার সাব ক্রয় করে বসবাস করে আসছে। কখনো এ জমি নিয়ে কারো আপত্তি বা অভিযোগ ছিল না।
সূত্র মতে জানা যায়,তাদের নামে রেকর্ড, নামজারি,খাজনা খতিয়ান সকল কিছুর বৈধভাবে ৩০ বছরের উর্ধে বসবাস করে আসছেন।
ভুক্তভোগী আলেকজান বিবি বলেন, আমার ছেলে সৌদি আরব প্রবাসী গত চার বছর আগে বাড়ির টিনের ঘর ভেঙে পাকা বাড়ি নির্মাণ করার উদ্যোগ নেয়, তারই পরিপ্রেক্ষিতে টিনের ঘর ভেঙ্গে পাকা বাড়ি নির্মাণের প্রস্তুতি নেয় বাড়ির কাজও ঠিকঠাক মতো চলছিল বিপত্তি বাঁধে ছাদ ঢালাই এর কাজ শুরু করলে।
স্থানীয় বাসিন্দা আবু কালাম বেপারী শাহনাজ আক্তার লায়লা বেগম কাজ বন্ধ করেন বলে কাজে বাধা দেয়। কারণ হিসেবে জানা যায়, তার মা ওযুফা বেগম এই বাড়িতে তাহার পৈতৃক ওয়ারিশ তাই তারা কাজে বাধা দিচ্ছে।
স্থানীয়ভাবে বিচার সালিশ করে কয়েক দফায় চার পাঁচ লাখ টাকা খরচ হয়ে যায় তবুও কোন সুরাহা করে দিতে পারেনি স্থানীয় সালিশ গন।
সব শেষ, ২০২১ সালে স্থানীয় সালিশগণ কাগজপত্র দেখে জমি পাবে না বলেও আলেকজান কে তিন লাখ টাকা প্রদান করার হুকুম দেন। আলেকজান বিবি তাতেই রাজি হয়ে যান এবং ৩০ হাজার টাকা বায়না প্রদান করেন আবু কালাম বেপারীর কাছে।
আমি টাকা দেব কিন্তু আমাকে জমি লিখে দিতে হবে বলেন আলেকজান বিবি। এ কথা শুনে অজুফা ও তার ছেলেমেয়েরা হতাশ হয়ে পড়েন।কারন, দলিল করে লিখে দিবে কিভাবে তাদের নামে তো জমি নেই।
জানা যায়, অজুফা বেগম ও তার ছেলে মেয়েরা পরামর্শ করে অন্য জমির মামলার সাথে দাগ বসিয়ে দেন। কারণ তাদের নামে তো কোন জমি নেই।
কাগজপত্র তৈরি করে এই জমির বিরুদ্ধে আদালতে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে ১৪৪/১৪৫ মামলা করেন, পরে আদালতের আদেশ মান্য করে, আলেকজান বিবি কাজ বন্ধ রাখেন। ওযুফা কোর্টে তার সঠিক কাগজপত্র বিচারকের সামনে উপস্থাপন করিলে কাগজপত্র সঠিক নাই বলে বিচারক নিষেধাজ্ঞা বাতিল করে দেন।
ভুক্তভোগী আলেকজান বিবির অভিযোগ, বাড়ির কাজ আবার শুরু করলে শাহজাহান বেগম আবু কালাম ব্যাপারী, লায়লা বেগম, সবাই মিলে বাড়িতে হামলা করেন এবং আলেকজান ও তার স্বামী মাঈনুদ্দিন চৌকিদার কে মারধর করেন। শ্রমিকের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন।
স্থানীয় লোকজন এসে আলেকজান বিবিকে বাড়ির কাজ করতে বলেন, অযুফা বেগম দেওয়ানী কোর্টে পৈত্রিক জমি দাবি করে দেওয়ানি মুকাদ্দমা করেন, যাহার নাম্বার মোকদ্দমায় দেঃ৬৬৮/২১আলেকজান বিবির জমি তাহার না হওয়া সত্বেও এই মোকাদ্দমা এই বাড়িতে তিন শতাংশ জমি দাবী করে। কোটে মামলা আছে বলে বাড়ির কাজ বন্ধ করে দেন পেশি শক্তির ক্ষমতা বলে।
ভুক্তভোগী আলেকজান বেগম বলেন, যদি কাজ করতে হয় তাদের ২০ লাখ টাকা দিয়ে করতে হবে তাহলে বাধা দিব না বলছে বলে জানান তিনি।
অনেকবার অভিযোগও করেন ভুক্তভোগী পরিবার। ২০২১ সালে, বাড়িতে কাজ করার জন্য আদেশ দেন তৎকালীন (ওসি) হাফিজুর রহমান।
কাজ শুরু করলে ওযুফা শরীয়তপুর জেলা ডিবি অফিসে মিথ্যা অভিযোগ করে ডিবি পুলিশ নিয়ে এসে কাজ বন্ধ করে দেন।
ডিবি পুলিশ দুই পক্ষকে কাগজপত্র নিয়ে শরীয়তপুর ডিবি অফিসে ডাকেন,আলেকজান বিবি কাগজপত্র দেখালেও অজুফা বেগম কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেননি বরংচ এক সপ্তাহের সময় চেয়েছেন। এভাবে ৪ বছর কেটে যায়। এতে করে বাড়ি নির্মাণের সরঞ্জাম নষ্ট হয়ে যায়।
আলেকজান বিবি আরো জানান, অজুফার মেয়ে লায়লা জসিম মল্লিক নামে তার মামাতো ভাইকে দিয়ে বাড়ি জমির উপর মিথ্যা মামলা করিয়েছে জাল কাগজ বানিয়ে আমাকে হয়রানি করার জন্য সেই মামলা নং৪৪৯/২২
জাল কাগজ দিয়ে বাড়ির উপর নিষেধাজ্ঞা চাইলে আদালত আবেদন পর্যবেক্ষণ করে আবেদনটি ভুয়া বলে খারিজ করে দেন।
আদালতে দেওয়ানি মোকাদ্দমা চলমান থাকলেও বাড়িতে বসবাস কিংবা কাজ করার উপর কোন বিধি-নিষেধ আরোপ করেনি।তবুও জোরপূর্বক ৩ শতাংশ জমির দাবিতে ১৮ শতাংশ জমির উপর কোন কাজ করতে না দিয়ে প্রায় ১০-১২ লাখ টাকার ক্ষতি করেছেন বলে জানান, সর্বশেষ মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি এবং ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবিও ১০ লাখ টাকার কয় ক্ষতির প্রতিকার চেয়ে জাজিরা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী আলেকজান।
জাজিরা থানার বর্তমান অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ দুলাল আকন্দ জানান, অভিযোগ দায়ের করেছেন আলেকজান বিবি আমরা সেটা আমলে নিয়েছি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে আইনগত পদক্ষেপ নেব।