পঞ্চগড়ে তরুণ সমাজকর্মী শান্তি বাঁচতে চান দেশবাসীর দোয়া ও সহায়তা নিয়ে

পঞ্চগড় প্রতিনিধি-নাম তার সাইফুল ইসলাম শান্তি। দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠায় গুজব, মাদক, কিশোর অপরাধ, দুর্নীতি ও সামাজিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে একের পর এক সচেতনতা মূলক কর্মসূচি চালিয়ে প্রশংসা কুড়িয়েছেন তরুণ ওই সমাজকর্মী। কিন্তু সেই শান্তি এখন আর শান্তিতে নেই। মস্তিষ্কের বিরল রোগে আক্রান্ত হয়ে বিছানায় মৃত্যুর প্রহর গুনছেন তরুণ এই সমাজকর্মী।
পঞ্চগড়ের এই তরুণ শান্তি শুধু নিজ গ্রাম বা জেলা নয়; সচেতনতা ছড়িয়ে দিয়েছেন দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। কুমিল্লা টাউন হলে ‘তুচ্ছ ঘটনায় হানাহানি নয়, আসুন মানুষকে ভালোবাসি’ লেখা ব্যানার হাতে দাঁড়িয়ে আলোড়ন তোলেন। কিশোর গ্যাং ও সামাজিক অপরাধ নিয়ে প্রচার চালান সিরাজগঞ্জে।
প্রশ্নফাঁস, কুসংস্কার, দুর্নীতি বিরোধী কর্মসূচি থেকে শুরু করে নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) অচলাবস্থা নিরসনে ঢাকায় একক মানববন্ধনও করেন। মানুষকে সচেতন করতে তেঁতুলিয়া-টেকনাফ পদযাত্রাও করেন পায়ে হেটে।
তবে গত চার মাস ধরে শান্তি ভুগছেন গুরুত্বর স্নায়ুবিক রোগে। বাম হাত ও পা ক্রমেই অবশ হয়ে পড়েছে, এখন নিজের কাজ নিজে করতে পারছেন না। ঢাকা ও দিনাজপুরের খ্যাতনামা নিউরোলজিস্টদের অধীনে চিকিৎসা নিয়েও সুস্থ হতে পারেননি তিনি। বর্তমানে তার পুরো শরীরেই অবশ ভাব ছড়িয়ে পড়ছে। চিকিৎসকদের ধারণা, সাইফুল ‘মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস (এমএস)’ নামের এক বিরল ও জটিল মস্তিষ্কজনিত রোগে আক্রান্ত। চিকিৎসকরা তাকে দ্রæত বিদেশে উন্নত চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন, বিশেষ করে সিঙ্গাপুরের নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালে। তবে এই চিকিৎসা ব্যয়ের পরিমাণ প্রায় ১৫ লাখ টাকা। যা সাইফুলের পরিবারের সামর্থ্যের বাইরে।
সাইফুলের বাবা আবদুল মজিদ বলেন, ঢাকা ও দিনাজপুরে অনেক বড় ডাক্তার দেখিয়েছি, কিন্তু কোনো উন্নতি হয়নি। এখন প্রায় নিঃস্ব হয়ে গেছি। দেশের মানুষের দোয়া আর সহযোগিতাই আমাদের শেষ ভরসা।
সাইফুল ইসলাম শান্তি বলেন,আমি চাই শুধু বেঁচে থাকতে, আবার মানুষের পাশে দাঁড়াতে। জীবনের বড় একটা সময় সমাজের ভালো কিছুর জন্য চেষ্টা করেছি, আজ নিজেই অসহায়। চার মাস ধরে আমি ক্রমাগত দুর্বল হয়ে পড়ছি, শরীর আর চলছে না, কিন্তু মন এখনো হেরে যায়নি। চিকিৎসকরা বলছেন, বিদেশে উন্নত চিকিৎসা ছাড়া সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কিন্তু সেই ব্যয় আমার পরিবারের সামর্থ্যের বাইরে। আপনাদের ভালোবাসা, দোয়া আর সামান্য সহযোগিতা হয়তো আমাকে আবার দাঁড়াতে সাহায্য করবে। আমি বিশ্বাস করি, ভালোবাসা ও সহানুভূতির শক্তিই সবচেয়ে বড় শক্তি