কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার কৃষকদের ভাগ্য বদলে দিয়েছে কচু ও লতি

মোঃ মহিবুল্লাহ্ ভূঁইয়া কুমিল্লা (বরুড়া)প্রতিনিধিঃ বরুড়া উপজেলার কৃষকদের ভাগ্য বদলে দিয়েছে পুষ্টিকর সবজি কচু ও লতি। অন্য ফসলের তুলনায় কম শ্রম ও বেশি লাভ হওয়ায় এই সবজি চাষ করছেন কয়েক হাজার কৃষক। তার পাশাপাশি অন্যান্য সবজি চাষ করে লাভবান এ অঞ্চলের কৃষকরা।
বিশেষ করে স্থানীয়দের চাহিদা মিটিয়ে, এখানে উৎপাদিত কচু ও লতি দেশের বিভিন্ন স্থানের বাজারে সরবরাহ হচ্ছে। এমনকি চাহিদা থাকায় কয়েক বছর ধরে সৌদি আরব, মালোশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যসহ প্রায় ৩০টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে এই কচু ও লতি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, বারুড়া উপজেলায় মূলত দুই জাতের কচুর চাষ বেশি হয়।সেগুলো হল- লতিরাজ ও বারি পানিকচু-৩।
লতিকচু থেকে শুধু লতি সংগ্রহ করা হয়। আর পানিকচু থেকে দুটোই সংগ্রহ করা হয়।
এখানকার কচু ও লতি খেতে সুস্বাদু এবং গলায় ধরে না, ফলে এর চাহিদা অনেক।
চাহিদার জোগান দিতে ১২ মাসই বাণিজ্যিকভাবে উপজেলা জুড়ে এই দুই সবজি চাষ করেন কৃষকরা। একবার রোপণ করলে ফলন পাওয়া যায় বছরের ৮-৯ মাস। কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় চাষিরা ঝুঁকছেন এ কচু লতি চাষে।
কৃষকরা জানান, ২০১৪ সালের দিক থেকে কচু চাষে মনোযোগ দেন চাষিরা। খরচের তুলনায় লাভ বেশি হওয়ায় কৃষকরা বাণিজ্যিকভাবে কচু ও লতি চাষ করতে থাকেন। যত দিন যাচ্ছে, এই সবজির চাষ বাড়ছে।
বর্তমানে পুরো উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে তিন হাজারের বেশি কৃষক কচু ও লতি চাষ করছেন।
এদিকে, দেশের বৃহৎ সবজি আড়ত কুমিল্লার নিমসার বাজার থেকে প্রতিদিনই রপ্তানি হচ্ছে কচুর লতি। প্রান্তিক কৃষকদের নিয়ে গঠিত ২৫টি সমিতির মাধ্যমে কচু ও লতি সংগ্রহ করা হয়।
এ কাজে স্থানীয় কৃষকদের সহযোগিতা করছে কৃষি সম্প্রসারণ অফিস। এছাড়া, ঢাকা-চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্থান থেকে আড়তদরা সরাসরি এলাকা থেকে কচু ও লতি সংগ্রহ করেন।
উপজেলার আগানগর ইউনিয়নের সরাফতি, বটতল, নিচিন্দুপুর ও নরিন এলাকার কৃষকেরা বলেন, “একবিঘা জমিতে দুই বছর ধইরা ধান বাদ দিয়া কচু ও লতি চাষ করতাছি। খরচ হইছে ২০ থেকে ২৫ হাজার। এহন পর্যন্ত লতি বেচছি ৪০ হাজার টাকার। আরো বেইচ্ছা পারমু কয়েক মাস। আমরার কচু-লতি বিদেশেও যায়।
একই এলাকার অন্যান্য কৃষকেরা বলেন , “বাজারে ৩০ থেকে ৪০ টাকা দরে প্রতিকেজি লতি বিক্রি করছি। লতি চাষের বড় সুবিধা হল- সপ্তাহে এক থেকে দুবারও লতি বিক্রি করা যায়। আমি এবার ৪৫ শতাংশ জমিতে এই সবজি চাষ করছি, খরচ গেছে ৪০ হাজার টাকা। এখন পর্যন্ত ৮০ হাজার টাকার বেশি লতি বেচছি। পাইকারেরা বাড়ি আইসা লতি লয়ে যায়।