# Tags

পার্বত্য উপদেষ্টার আদিবাসী পরিচয় দাবির প্রতিবাদে রাঙামাটিতে পিসিসিপির বিক্ষোভ

আলমগীর মানিক,রাঙামাটি-‘আদিবাসী’ পরিচয়ের দাবিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার বক্তব্য ও সংস্কৃতি উপদেষ্টার লাগামহীন কার্যক্রমের বিরুদ্ধে রাঙামাটিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ পিসিসিপি’র বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরওয়ার ফারুকী কর্তৃক “ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের নাম পরিবর্তন ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা কর্তৃক ‘আদিবাসী’ পরিচয়ের দাবিতে প্রদত্ত বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে অদ্য (৩০ জুন) সোমবার পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ পিসিসিপি রাঙামাটি জেলা শাখার উদ্যােগে কাঠালতলী থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে বনরূপা সিএনজি স্টেশন চত্বরে সমাবেশে মিলিত হয়।

বিক্ষোভ সমাবেশে পিসিসিপি রাঙামাটি জেলা সভাপতি মো. আলমগীর হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান এর সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন পিসিএনপি’র রাঙামাটি জেলা সভাপতি মো. সোলায়মান, পিসিসিপি রাঙামাটি জেলা শাখার যুগ্ন সম্পাদক রবিউল ইসলাম, বরকল উপজেলা সভাপতি তসলিম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক ও জেলা প্রচার সম্পাদক ইসমাঈল গাজী, লংগদু উপজেলা সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ হোসেন, পিসিসিপি পৌর সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম বাবু প্রমুখ।

সমাবেশে পিসিসিপি নেতৃবৃন্দ বলেন, ২৩ জুন অনুষ্ঠিত ঐ সভায় ‘ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান আইন, ২০১০’ সংশোধনের লক্ষ্যে ‘নৃ-বৈচিত্র্য সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান অধ্যাদেশ, ২০২৫ (প্রস্তাবিত)’ বিষয়ে আলোচনা হয় এবং সাতটি সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের নাম পরিবর্তন করে ‘জাতি-বৈচিত্র্য ইনস্টিটিউট’ রাখার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, “আমরা আদিবাসী শব্দটি চাচ্ছি শুধু আমাদের আইডেন্টিফিকেশনের জন্য। তার এই বক্তব্য দ্ব্যর্থবোধক এবং সংবিধানবিরোধী অবস্থানকে উসকে দেয়। বাংলাদেশের সংবিধানের ৬(২) অনুচ্ছেদে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে: “রাষ্ট্রের জনগণ জাতি হিসেবে বাঙালি এবং নাগরিক হিসেবে বাংলাদেশের নাগরিক হইবে।” একটি দায়িত্বশীল পদে অধিষ্ঠিত ব্যক্তি কর্তৃক এমন বক্তব্য প্রদান শুধু অনভিপ্রেতই নয়, বরং তা জাতিগত উত্তেজনা এবং বিভাজনের রাজনীতিকে উৎসাহিত করতে পারে বলে মন্তব্য করেনেতৃবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশ একটি একক ও অভিন্ন জাতিসত্তাভিত্তিক রাষ্ট্র। বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক অধিকারকে সরকার দীর্ঘদিন ধরে সম্মান জানিয়ে আসছে। কিন্তু এই অধিকার চর্চা যদি একক জাতিসত্তার বিপরীতে সংবিধানবিরোধী রাজনৈতিক দাবিতে রূপ নেয়, তাহলে তা ভবিষ্যতের জন্য অশনি সংকেত।
আমরা বিশেষভাবে উদ্বিগ্ন যে, সভায় ৭(ঘ) ধারা সংশোধনের মাধ্যমে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীভুক্ত ৬ জন প্রতিনিধির প্রস্তাব সংসদীয় প্রতিনিধিত্বের কাঠামোতে একপাক্ষিকতা তৈরি করতে পারে। এতে পার্বত্য অঞ্চলের বাঙালি জনগোষ্ঠীর রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিনিধিত্ব সংকুচিত হবে এবং দীর্ঘদিনের সহাবস্থানের চর্চা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে।